চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়: লেটুস

লেটুস জনপ্রিয় একটি সবজি। নানাভাবে আমরা লেটুস খেয়ে থাকি। লেটুস গাছের পাতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরকারি হিসেবে চাষ করা হয়। তবে কখনও কখনও এর ডাঁটা ও বীজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রাচীন মিসরীয়রা আগাছা থেকে সর্বপ্রথম লেটুস আবিষ্কার করে। তখন লেটুসের বীজ থেকে তেল তৈরি করা হতো। সরস পাতাগুলো খাবার হিসেবে গ্রহণ করা হতো। তেলসমৃদ্ধ বীজের কারণে এটি গ্রিক ও রোমানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে তারা এর নামকরণ করেন ল্যাকটুকা, যার ইংরেজি আধুনিক নামকরণ করা হয় ‘লেটুস’। ইউরোপে ১৬শ থেকে ১৮শ শতাব্দীতে লেটুসের বিভিন্ন প্রজাতির ক্রমবিকাশ লক্ষণীয়। মূলত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা লেটুসের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে, তবে বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে লেটুসের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে।

গুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম লেটুসে থাকে ১৪ কিলোক্যালোরি। শর্করা ২.৯ গ্রাম, সোডিয়াম ২৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৯৪ মিলিগ্রাম, লিপিড ০.২ গ্রাম, প্রোটিন ১.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৬ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৯.২ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৯ গ্রাম। এছাড়া লেটুসে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ও ফাইবার।
উপকারিতা
লেটুস একটি আঁশযুক্ত সবজি। এতে সামান্য পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে, তাই এটি হৃদযন্ত্রের জন্য বেশ উপকারী
কিডনির সমস্যার জন্য যেসব রোগীদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় তাদের জন্য লেটুসপাতা ভীষণ কাজে দেয়। তাছাড়া এই পাতার সোডিয়াম ভিটামিন বি-ওয়ান, বি-টু, বি-থ্রি শরীরের যেকোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে
লেটুসপাতায় রয়েছে ৯৫.৫ গ্রাম পানি। এই পানি রক্তের লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেতকণিকা, অনুচক্রিকা ও অন্যান্য উপাদানকে সুস্থ-সবল রাখে। এতে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় শরীরে চর্বি ও ওজন কমায়
কিছু লেটুসের জাত রয়েছে, যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। বিপাকক্রিয়ায় এর ভূমিকা অপরিহার্য। তা ছাড়া এই পুষ্টি উপাদানকে বলা হয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
ত্বকের কোথাও কেটে গেলে এই
পাতা থেঁতলে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা ভালো হয়
গর্ভবতী মায়েরা কাঁচা লেটুসপাতা
খেলে মা ও শিশু উভয়ের শরীরেই রক্তের মাত্রা বাড়ে
এতে রয়েছে আয়রন, যা নারীদের ঋতু চলাকালে আয়রনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে
যারা লেটুসপাতা নিয়মিত খান তাদের পেট ভার হয়ে থাকা, গ্যাস হওয়া, ক্ষুধা না লাগা, অ্যাসিডিটি প্রভৃতি সমস্যা দূর হয় এবং বার্ধক্য আসে দেরিতে। এটি ত্বকে বলিরেখা পড়তে বাধা দেয়
এর প্রোটিন দেহের পেশি গঠনে সাহায্য করে
চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যায় এক বা দুই লিটার পানিতে সামান্য লেটুসপাতা প্রায় ছয় মিনিট ফুটিয়ে সেই পানিতে চোখ ধুলে চোখ ওঠা দ্রুত ভালো হয়। চোখের অতিরিক্ত পরিশ্রমের পরও এই ফুটানো পানি ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করলে চোখের ক্লান্তি দূর হয়
ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস
লেটুস। হাড় ও দাঁতের গঠনে এটি ভূমিকা রাখে
ইনসমনিয়া দূর করতে সহায়তা করে
খুশকির বিরুদ্ধেও কাজ করে এই পাতা। অনেক শ্যাম্পুতে লেটুসপাতার গুঁড়া ব্যবহার করা হয়
দীর্ঘ সময় রৌদ্রে থাকলে ত্বকে কালচে পোড়া ভাব হয়। লেটুসপাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়
স ক্যানসার বিশেষ করে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে লেটুস

হাসানুজ্জামান পিয়াস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০