ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণে ভেঙে গেছে সড়কের গাইড ওয়াল

শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নির্মাণের সাত দিন পরই ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ সড়কের গাইড ওয়াল। উপজেলার গোবিন্দাসী বাজার থেকে গোবিন্দাসী স্কুল রোড পর্যন্ত ১৩১ মিটার দীর্ঘ এ সড়কটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙে ও দেবে যাওয়ায় অর্থ আত্মসাৎসহ দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহেলার অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, গোবিন্দাসী বাজার থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর সড়কে যাতায়াতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। এ জন্য গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠটিই একমাত্র ভরসা। বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী মাঠ ব্যবহার করে যাতায়াতের ফলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় যাতায়াতকারীদের। এর ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এলাকাবাসীর দাবি ও জনগুরুত্ব বিবেচনা করে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। হাটবাজার ইজারার ১৫ শতাংশ অর্থ থেকে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কোটেশেনের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয় পছন্দের ঠিকাদারকে। কিন্তু কাজ শেষ না করেই বিল তুলে নেন ঠিকাদার। সম্প্রতি ফের সড়কটি যাতায়াত উপযোগী করতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে একটি সংস্কার প্রাক্কলন তৈরি করে স্থানীয় সরকারের উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। কোটেশনের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয় শহিদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
২৯ মার্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী অনিক সাহা স্বাক্ষরিত একটি অনুমতিপত্র প্রদান করা হয় ঠিকাদারকে। কাজের মধ্যে ছিল ১৫ মিটার গাইড ওয়াল সংস্কার, ৮৯ মিটার মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট, ১৩১ মিটার দৈর্ঘ্য, তিন মিটার প্রস্থ ও ছয় ইঞ্চি পুরু সিসি ঢালাই এবং দুই ফুট গভীরতায় এজিং।
স্থানীয়রা জানায়, ঠিকাদারের নাম ব্যবহার করলেও মূলত কাজটি করেন গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু। তিনি কাজের জন্য প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, টাকা লোপাট করতে গাইড ওয়াল সংস্কার করা হয়নি। গাইড ওয়াল সংলগ্ন গর্তে ফেলা হয়নি কোনো মাটি। সড়ক প্রস্থে তিন মিটার হওয়ার কথা থাকলেও করা হয়েছে পৌনে তিন মিটার। ছয় ইঞ্চি পুরু সিসি ঢালাইর স্থলে করা হয়েছে মাত্র দুই ইঞ্চি। দুই ফিট গভীর এজিংয়ের স্থলে করা হয়েছে এক ফুট। এর ফলে কাজ শেষ করার সাত দিনের মাথায় ভেঙে ও দেবে গেছে সড়কটি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু জানান, ঠিকাদারি কাজে একটু উনিশ-বিশ হয়। কাজটা শুরু হয়েছে পূর্বের চেয়ারম্যানের সময়। গাইড ওয়াল ভেঙে যাওয়া ও সড়ক দেবে যাওয়ার জন্য নি¤œমানের কাজ দায়ী নয়। প্রকৌশল বিভাগের প্রাক্কলন ত্রুটি ও তদারকির অভাবেই এমনটি ঘটেছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী অনিক সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, ঘটনাটি জেনে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এখনও বিল প্রদান করা হয়নি। অভিযোগ সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১