স্বপ্নের কোনো দিক নেই, সীমাও নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর স্বপ্নের সিঁড়িগুলো ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসতে পারে নানা কারণে। কারও ক্ষেত্রে তা ঘটতে পারে সুযোগের অপর্যাপ্ততার কারণে। এক্ষেত্রে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ’ অফুরন্ত সম্ভাবনাময় একজন শিক্ষার্থীকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সহায়তা করে।
লক্ষ্য
ক্লাবটি ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল ও পিএইচডি গবেষকসহ গবেষণামনস্ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা হলো সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে শিক্ষার্থীদের গবেষণাসংশ্লিষ্ট নতুন ধারণা দেওয়া। তাদের উৎসাহ ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেমিনার, গবেষণা উৎসবের আয়োজন করা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গবেষণার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, যার মাধ্যমে নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট, থিসিস, মনোগ্রাম সঠিকভাবে সম্পন্ন করা যায়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের জন্য সহযোগিতা করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সংগঠনটি। এ বিষয়ে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও এমফিল গবেষক সাইফুল্লাহ সাদেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে নতুন জ্ঞান তৈরির অন্যতম ক্ষেত্র, যা সমাজ, দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে। গবেষণা সংসদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে নতুন নতুন ধারণা নিয়ে বহুমুখী কাজ করে। শিক্ষক, বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও ক্যাম্পাসের গবেষণা সেন্টার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের এ প্ল্যাটফর্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
নিয়মিত কার্যক্রম
শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সার্বিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সংসদের উদ্দেশ্য। নিয়মিত গবেষক আড্ডা, গবেষণা কর্মশালা, দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক কর্মশালা, গবেষণা উৎসব, আইডিয়া কনটেস্ট, গবেষণা প্রতিবেদন ও জার্নাল প্রকাশ, সেমিনারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের মিলনমেলার আয়োজন করে এ সংসদ। গবেষণাকে নতুন কর্মক্ষেত্রে রূপায়ণ করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সংসদ।
সংসদকে আন্তর্জাতিকীকরণ
গবেষণাকে আকর্ষণীয়, সম্মানীয় ও মূল্যবান বিষয় হিসেবে উপস্থাপনের জন্য বিজ্ঞানী, দার্শনিক, ইতিহাসবিদদের আমন্ত্রণ জানায় এ সংসদ। তারা ক্লাস নিয়ে থাকেন। তাদের অনুভূতি ও গবেষণাবিষয়ক অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা হয়। তাদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করার উদ্যোগ রয়েছে সংগঠনের। এ বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ রেজা বলেন, নতুন ভালো আইডিয়ার মাধ্যমে দেশ ও মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্য ছাত্রদের গবেষণায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য এটি একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
ইচ্ছেপূরণে জিম্যাট
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নত মান ও ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের চাহিদার কারণে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা নিতে চান অনেকেই। এ ইচ্ছাপূরণের প্রথম ধাপ হিসেবে রয়েছে কিছু কোর্স। এর মধ্যে অন্যতম জিম্যাট নিয়ে আজকের আয়োজন
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির জন্য প্রযোজ্য জিম্যাট। জিম্যাট হচ্ছে গ্রাজুয়েট ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় এমবিএ করার জন্য এ পরীক্ষার স্কোর দরকার।
কোর্সটির সর্বসাকল্যে স্কোর হচ্ছে ৮০০। চারটি অংশে নেওয়া হয় এ পরীক্ষা। সময় তিন ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ফি ২৫০ ডলার। বছরের বিভিন্ন সময়ে এ পরীক্ষা দেওয়া যায়। তাই প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিলে ভালো ফল অর্জন সম্ভব। প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বৃত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জিম্যাট কোর্সের সার্টিফিকেট গ্রহণ করে থাকে। এজন্য মিনিমাম স্কোর ৭২০ এর ওপরে রাখতে হয়।
চারটি অংশের মধ্যে রয়েছে
অ্যানালিটিক্যাল রাইটিং অ্যাসেসমেন্ট
এটি রাইটিং পার্ট। এখানে একটি বিষয় দেওয়া হয়, তা নিয়ে যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করতে হয়। নিজের মতামত নয়, ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে হয় এ অংশে। সময় ৩০ মিনিট।
ইন্টিগ্রেটেড রিজনিং
এখানে ১২টি প্রশ্ন থাকে। সময় ৩০ মিনিট। প্রশ্নের ধরন হবে নানা ধরনের যুক্তি খণ্ডন, ছক বিশ্লেষণ, গ্রাফিকস নিয়ে।
কোয়ান্টিটেটিভ
এখানে ৩৭টি প্রশ্ন থাকবে। প্রশ্নগুলো সাধারণ গণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি থেকে করা হয়। সময় হচ্ছে ৭৫ মিনিট। প্রশ্নের ধরন হচ্ছে সমস্যা সমাধান ও ডেটা সাফিসিয়েন্সি।
ভারবাল
এখানে প্রশ্ন থাকে ৪১টি। সময় ৭৫ মিনিট। প্রশ্নের ধরন হচ্ছে বাক্য সংশোধন, রিডিং কমপ্রিহেনশন আর ক্রিটিক্যাল রিজনিং।
প্রস্ততির জন্য ব্যারনস, কাপলান, প্রিন্সটনের নানা বইয়ের সাহায্য নিতে পারেন। ঢাকার আমেরিকান সেন্টার ও ইএমকে সেন্টারে জিম্যাট পরীক্ষার নিবন্ধন, ফি, প্রস্তুতি বিষয়ে তথ্যসহায়তা পাবেন। এছাড়া www.mba.com ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
Add Comment