স্কলারশিপ নয় সোনার হরিণ

শাহ আলী দোলন: মেধা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে নানা ধরনের বৃত্তি। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়ালেখা করতে চান। অবশ্য বিদেশে পড়ালেখার ব্যয়ভার বহন করা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে স্কলারশিপ প্রোগ্রাম।

প্রতি বছর লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এর মধ্য থেকে অনেকে বিদেশি ডিগ্রি অর্জন করতে চান। অনেকে বৃত্তির জন্য মুখিয়ে থাকেন। তবে স্কলারশিপ প্রোগ্রাম প্রক্রিয়া বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। বৃত্তির আওতায় একজন ছাত্র আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন। বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণত ভালো একাডেমিক রেজাল্ট আশা করা হয়। অনেক সময় দেখা যায়, বৃত্তি পাওয়ার পরও কাক্সিক্ষত গ্রেড নাম্বার রাখতে ব্যর্থ হলে তা বাতিল করা হয়। এটাও মনে রাখা দরকার, সবসময় একাডেমিক ক্যারিয়ারই স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র পরিচায়ক নয়।

ভাষাগত দক্ষতার জন্য আইইএলটিএস, টোফেল ও অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটির জন্য জিআরই, জিম্যাট প্রভৃতি পরীক্ষায় ভালো করা আবশ্যক। স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে; যা একজন শিক্ষার্থীর পরবর্তী জীবনে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করবে। তাই এ ব্যাপারে চটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনই উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় চায় একজন বিদেশি ছাত্র হিসেবে তার শিক্ষাগত জীবনের রেজাল্ট, ভাষাগত পরীক্ষাসহ অন্যান্য উপযোগী পরীক্ষাগুলোয় ভালো ফল। অনেকে শিক্ষাগত জীবনে খুব আহামরি রেজাল্ট না করেও জিআরই, জিম্যাট, টোফেল, আইইএলটিসে ভালো  স্কোর করে স্কলারশিপের আশা জিইয়ে রাখছে।

আসুন দেখে নিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পেতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে অনার্স বা সম্মান প্রোগ্রাম। চার বছরের এ সময়কালকে ফ্রেশম্যান ইয়ার, সফোমোর ইয়ার, জুনিয়র ইয়ার ও সিনিয়র ইয়ার বলা হয়। গ্র্যাজুয়েট লেভেলে রয়েছে মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রাম। সাধারণত এফওয়ান ভিসা নিয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে পড়ালেখার জন্য আমেরিকায় পাড়ি জমাতে পারবেন।

অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ

সহজ করে বললে, অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ পাওয়ার অর্থ হচ্ছে স্কলারশিপ অর্জন। এর অন্য নাম ফান্ডিং। দুই ধরনের অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ রয়েছে।

এক. রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ আমরা অনেকে বিজ্ঞানী আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে আলাদা মনে করি। তবে আমেরিকায় এ দুটো টার্ম  ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ওখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণা করেন। ইউনিভার্সিটির ল্যাবে তাদের রিসার্চ চলে। এসব রিসার্চের জন্য তাদের অ্যাসিস্ট্যান্টের প্রয়োজন হয়। তাই তারা রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট অফার করেন।

এটা এমন একটা চাকরি, যেখানে আপনাকে থিসিস নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য আপনার কোর্সওয়ার্কের টিউশন ফি মওকুফ করে দেওয়া হবে। আবার মাসে মাসে কিছু টাকা ও হাত খরচও পেয়ে যাবেন। টাকার অঙ্কটা ভালোই, খেয়ে-পরে প্রত্যেক মাসে কিছু টাকা বেঁচেও যাবে।

দুই. রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ শিক্ষকদের অনেকেই নামকরা বিজ্ঞানী, অনেকে নোবেল বিজয়ী, অনেকে নোবেল জয়ের তালিকায় রয়েছেন। অর্থাৎ তারা খুব ব্যস্ত। এমন অবস্থায় উনি হয়তো পরীক্ষার হলে পরিদর্শকের কাজ করে ৩ ঘণ্টা নষ্ট করবেন না। বরং রিসার্চ মেথডের প্রতিই তার আগ্রহ বেশি থাকে। তাই এ কাজের জন্য শিক্ষকের প্রয়োজন একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট। রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টও।

আমেরিকার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট লিঙ্ক দেওয়া হলো: http://www.utdallas.edu/, https://www.ohio.edu/, http://www.troy.edu/  প্রভৃতি।

আমেরিকার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিভার্সিটিগুলো বিশ্বমানের স্কলারশিপ স্পন্সর করে থাকে। ইউরোপের প্রায় দেশই বৃত্তি প্রদান করে থাকে। ইউরোপে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি ওই দেশের ভাষা শিখে ফেলা উচিত। এতে করে ওখানের জীবনযাপন ও খণ্ডকালীন কাজ পেতে সহায়ক হবে। খুব সহজে ওই সমাজের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবেন। ফলে ভিনদেশে সময়টা বেশ উপভোগ করতে পারবেন। প্রয়োজনীয় দুটি ওয়েবসাইট।

https://eacea.ec.europa.eu/erasmus-plus/library/scholarships-catalogue-en, http://www.topuniversities.com/student-info/scholarship-advice/scholarships-study-europe|

যেখানেই পড়ালেখা করতে যান না কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে পছন্দের কোর্স প্রোগ্রাম বা ডিপার্টমেন্টপ্রধানকে ই-মেইল করুন। তার দেখানো পথেই খুঁজুন বৃত্তিসহ অন্যান্য সব বিষয়।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০