বাংলাদেশ থেকে ১৯ ধরনের কর্মী পাঠানো যাবে আমিরাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে ১৯ ধরনের কর্মী সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হবে। দুদেশের সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে এ জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গতকাল দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ১৮ এপ্রিল সই করা এমওইউ অনুযায়ী ব্যক্তি পর্যায়ে ১৯টি ক্যাটেগরির কর্মী নিয়োগের বিষয়টি কার্যকর হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, ‘তদবির সেন্টার’ অর্থাৎ ‘ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের’ মাধ্যমে বাংলাদেশের কর্মীদের নিয়োগ করবে। ‘তদবির সেন্টারটি’ সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের মানবসম্পদ ও এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে সরাসরি কাজ করবে। এ ব্যাপারে একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে কাউকে কোনো টাকা ব্যয় করতে হবে না বলে মন্ত্রী জানান।
যে ১৯টি ক্যাটেগরিতে কর্মী নেওয়া হবে, তাদের মধ্যে রয়েছেন হাউসমেইড, প্রাইভেট সেইলর, ওয়াচম্যান অ্যান্ড সিকিউরিটি গার্ড, হাউস হোল্ড শেফার্ড, ফ্যামিলি সোফিউর, পার্কিং ভ্যালেট ওয়ার্কার্স, হাউসহোল্ড হোর্স গ্রুমার, হাউস ফ্যালকন কেয়ারটেকার অ্যান্ড ট্রেইনার, ডোমেসটিক লেবারার, হাউস কিপার, প্রাইভেট কোচ, প্রাইভেট টিচার, বেবি সিস্টার, হাউসহোল্ড ফার্মার, গার্ডেনার, প্রাইভেট নার্স, প্রাইভেট পিআরও, প্রাইভেট এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার ও কুক।
মন্ত্রী বলেন, শিগগিরই সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে কর্মী নিয়োগের সব বাধা দূর হয়ে যাবে। শ্রমিকদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বড় শ্রমবাজার খুলছে না। বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে এক হাজার শ্রমিক দেশটির কারাগারে আটক রয়েছেন এমন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধের কারণেই আমরা ওই দেশে শ্রমিক প্রেরণে পিছিয়ে আছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার ও বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা।
সচিব নমিতা হালদার বলেন, ‘আমিরাতের মন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে অতীতে যেহেতু অনেক বিশৃঙ্খলা হয়েছে, এ কারণে তারা ৫০০ রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি বাতিল করেছে। সে ৫০০ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে। একটিমাত্র এক্সিকিউটিভ অর্ডারে তারা বন্ধ করেছে। শুধু তদবির সেন্টারের মাধ্যমে তারা লোক নেবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘১৯টি ক্যাটেগরিতে কিন্তু নারী-পুরুষ উল্লেখ নেই। নির্বিশেষে সবাই যেতে পারবেন। সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে আমরা লোক পাঠাতে পারব। মাইগ্রেশন কস্ট, মেডিক্যাল থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি বিষয় জয়েন্ট কমিটি ঠিক করবে।’
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১০ লাখ আট হাজার ৫২৫ জন কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ফলে ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ১৬৫টি দেশে প্রায় এক কোটি ১৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছে। এ সময় ১৩ হাজার ৫২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৭ জন বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছেন। চলতি বছর ৬০৫ জন কর্মী গেছেন। ২০১৭ সালে গেছেন চার হাজার ১৩৫ জন কর্মী। গত ১৮ এপ্রিল দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিজ নিজ দেশের পক্ষে শ্রমিক প্রেরণ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০