নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সরকারের রূপকল্প ২০২১ সামনে রেখে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরকে ব্যবহারকারী-বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ। গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (বন্দর দিবস) উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্রচারমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা’য় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল ব্রিটিশ-ইন্ডিয়া সরকার পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট কার্যকর করে। তখন থেকে চট্টগ্রাম বন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। তাই প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস উদযাপন করে আসছে।
মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রাণখ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতি বছরই বাড়ছে পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো এবং কনটেইনার হ্যান্ডলিং। গত ২০১৬ সালে তিন হাজার ১৪টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হয়। এসব জাহাজে কনটেইনার আসে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯০৯ টিইইউএস ও কার্গো আসে সাত কোটি চার লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৪ মেট্রিক টন। আর অপরদিকে ২০১৭ সালে মোট তিন হাজার ৩৭০টি জাহাজ বন্দরে আসে। এসব জাহাজে কনটেইনার আসে ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টিইইউএস এবং কার্গো আসে সাত কোটি ৮২ লাখ আট হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ, কার্গোতে ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং কনটেইনারের হয় ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর খোলা পণ্য (কার্গো), কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি সামাল দেওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রূপকল্প সামনে রেখে স্ট্র্যাটেজিক মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের দিকনির্দেশনায় নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) জন্য হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৯টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন, চারটি স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, পাঁচটি কনটেইনার মুভার, একটি রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহ করে বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট ফ্লিটে সংযুক্ত করেছি। তিনটি স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার শিপমেন্ট করা হয়েছে, যা শিগগির বন্দরে পৌঁছাবে।
তিনি আরও বলেন, ছয়টি শিপ টু শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন, দুটি আরটিজি, একটি মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহের আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। চারটি শিপ টু শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহের দরপত্র মূল্যায়ন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ছয়টি আরটিজির এলসি খোলা প্রক্রিয়াধীন ও তিনটি আরটিজির দরপত্র মূল্যায়নাধীন আছে। তিনটি স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার সংগ্রহের জন্য শিগগির চুক্তি সম্পাদিত হবে।
সভায় বন্দরের সদস্য কমোডর শাহিন রহমান, ক্যাপ্টেন খন্দকার আকতার হোসেন ও কামরুল আমিন, বন্দর সচিব ওমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে চট্টগ্রাম বন্দর
