বাণিজ্য বিনিয়োগ ও পর্যটন খাতে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় সহযোগী হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। সমুদ্রবর্তী প্রতিবেশী এ দেশটির জনসংখ্যা ২৬ কোটি। এজন্য বাংলাদেশি পণ্যের জন্য এটি বড় বাজার। দু’দেশের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য রয়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়া থেকে রফতানির চেয়ে আমদানিই বেশি হয় বাংলাদেশের। ফলে দু’দেশের মধ্যে রয়েছে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি। এ অবস্থায় দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পর্যটন খাতে সম্পর্ক বাড়াতে প্রথমবারের মতো ইন্দোনেশিয়ার ফেয়ার আয়োজন করা হচ্ছে ঢাকায়।
আগামীকাল রজধানীর লা-মেরিডিয়ান হোটেলে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হবে। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস ও ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইন্দো-বিডিসিসিআই) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করছে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দেশটির রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোমারনো এবং চেম্বার সভাপতি এমএ খান বেলাল।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত বলেন, ২৬ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা উš§ুক্ত থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য। এতে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন পণ্য ও সেবার প্রদর্শনী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংলাপ ও যোগাযোগ হবে। এতে ইন্দোনেশিয়া থেকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪৫টি কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। এছাড়া ফ্যাশন শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হবে। মূলত ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও পণ্যসামগ্রী সম্পর্কে বাংলাদেশিদের ধারণা সমৃদ্ধ করার জন্যই প্রথমবারের মতো এ আয়োজন করা হচ্ছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত রিনা আরও বলেন, দু’দেশের আর্থসামাজিক অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে, যা দুদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির পেছনের মূল যুক্তি। ইন্দোনেশিয়া এখন পৃথিবীর ১৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। এটি জি-২০-এর সদস্য দেশ। এর অর্থনীতির আকার ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। তবে আমরা এখনও জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের মতো সাত শতাংশে নিতে পারিনি। এ ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে চাই।
এ সময় ইন্দো-বিডি চেম্বারের সভাপতি এমএ খান বেলাল বলেন, বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। এর মধ্যে রয়েছে এলএনজি, কয়লা, পাম অয়েল, রেলগাড়ির বগি, ক্লিঙ্কার, কাগজের মণ্ড ইত্যাদি। অন্যদিকে ইন্দেনেশিয়া পাট, তৈরি পোশাকসহ কিছু পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ মাত্র ৪৪ মিলিয়ন ডলার, যা খুবই কম। দু’দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে আমদানি-রফতানির পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রথমবারের মতো মেলা আয়োজনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ হবে বলে আশা করা যায়।
এ সময় আরও বলা হয়, সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার সরকারপ্রধান জোকো উইদোঁদো ঢাকা সফর করেছেন। এ সময় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পারতামিনার সঙ্গে পেট্রোবাংলার চুক্তি হয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশকে এলএনজি সরবরাহ করবে ইন্দোনেশিয়া। এছাড়া সোনাদিয়ায় এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হবে আগামী জুলাইয়ে। এগুলো দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করছে। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ছাড়াই এক মাসের জন্য ভ্রমণের সুযোগ ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া, যা অনেক বাংলাদেশি জানে না। মেলার মাধ্যমে এসব সুযোগ সম্পর্কে সবাইকে অবগত করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০