শেয়ার বিজ ডেস্ক: সাড়ে ছয় দশকের বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ঐতিহাসিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। কোরীয় উপদ্বীপকে সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করা ও শান্তি রক্ষায় দুই কোরিয়া এক ঐতিহাসিক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে। দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজমে গতকাল শুক্রবার এক বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের যৌথ ঘোষণা আসে। পাশাপাশি এ বছরই শান্তিচুক্তিতে সই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার এসেছে দুই নেতার কাছ থেকে। খবর বিবিসি, রয়টার্স।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো শীর্ষ নেতার মধ্যে গত এক দশকের মধ্যে এ ধরনের বৈঠক এটাই প্রথম। এরপর উত্তর কোরিয়ার নেতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধ অবসানের ৬৫ বছর পর এবারই প্রথম কোনো উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রনায়ক আলোচনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছান। এর আগে দুই কোরিয়ার নেতারা দুবার আলোচনায় বসলেও দুবারই সেই আয়োজন হয়েছিল পিয়ংইয়ংয়ে। এবারের বৈঠকের পুরো পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছে। বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে সই করেন দুই দেশের নেতারা। এরপর ঘোষণা আসে তাদের পক্ষ থেকে। মুন জে-ইন বলেন, ‘কিমের সাহস ও ইচ্ছাশক্তির প্রশংসা করি আমি।’
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ঐতিহাসিক সম্মেলনে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরীয় নেতা একমত হনÑতারা আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তিচুক্তি আলোচনায় বৈঠকে বসবেন।
এছাড়া জানানো হয়, মানবিক সংকটগুলো সমাধানে জরুরি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দুই দেশ। কোরীয় উপদ্বীপে সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা করবেন তারা। সে লক্ষ্যে মে মাসেই দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বৈঠক করবেন। আর ১ মে থেকে বন্ধ হবে লাউডস্পিকার ও লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণা কার্যক্রম।
বিবৃতিতে জানানো হয়, সামনের শরতেই পিয়ংইয়ং সফরে যাবেন মুন। কিয়াসংয়ে দুই দেশের এক লিয়াজোঁ অফিস স্থাপনে একমত হয়েছেন দুই নেতা।
যৌথ ঘোষণায় কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে উচ্চাকাক্সক্ষী লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। এতে মূলত উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কোরীয় যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিবার থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।
শান্তির পথে ঐকমত্যে দুই কোরিয়া
