বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফেসবুকের কোটি কোটি গ্রাহকের তথ্য চুরি করে অপব্যবহার করার দায়ে অভিযুক্ত নির্বাচনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাজ্যভিত্তিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসসিএল ইলেকশনস লিমিটেডও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ার কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার এ সিদ্ধান্তের কথা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। তবে বন্ধ হয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চলমান সব ধরনের তদন্ত অব্যাহত থাকবে। খবর রয়টার্স, বিবিসি, চ্যানেল নিউজ এশিয়া।
ফেসবুক কেলেঙ্কারির পর থেকেই বিশ্বব্যাপী কোম্পানিটির ব্যবসায় ধস নেমেছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কারণে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ গ্রাহক ও সহযোগীরা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, যে কারণে কার্যকর ভালো কোনো বিকল্প না থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত বন্ধ হচ্ছে না। যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনারের দফতর জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলেও এখনও এর সঙ্গে অনেক ব্যক্তি ও পরিচালক জড়িত রয়েছেন। আর কমনস সিলেক্ট কমিটি ফর ডিজিটালম কালচার, মিডিয়া অ্যান্ট স্পোর্টসের (ডিসিএমসি) প্রধান ডেমিয়ান কলিনস এক টুইট বার্তায় বলেছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ও এসসিএল গ্রুপ বন্ধ হলেও তাদের তথ্যের ইতিহাস মুছে ফেলার অনুমতি পাবে না। তাদের কাজের বিষয়ে চলমান তদন্ত খুবই স্পর্শকাতর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করে তার অপব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে। যে তথ্য পরে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।
এ অভিযোগ ওঠার পরপরই ফেসবুকের শেয়ারে ব্যাপক ধস নামে। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি। এর ফলে তথ্য ফাঁসের দায় কাঁধে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ওই কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, গত বুধবার থেকেই কোম্পানিটি নিজেদের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার পাশাপাশি কর্মীদের কম্পিউটারও বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির লন্ডন অফিসের রিসেপশন বিভাগও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এসসিএলের ওয়াশিংটন ডিসি অফিসের কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনারের দফতরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি সব ধরনের তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালানোর নাম করে তথ্য চুরি করে নেয় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। শুরুর দিকে এ ধরনের তথ্য নেওয়ার বিষয়ে ফেসবুকের অনুমতি ছিল। পরে সেগুলো ফেসবুক মুছে ফেলার নির্দেশ দিলেও প্রতিষ্ঠানটি তা করেনি। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওই তথ্য ব্যবহারের বিষয়টি সামনে আসে, যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে বিতর্কের একপর্যায়ে মার্ক জাকারবার্গ ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি কংগ্রেসের শুনানিতেও হাজির হতে বাধ্য হন।

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০