কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন পেল চীনা কনসোর্টিয়াম

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের দুই পুঁজিবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কিছু শর্তসাপেক্ষে চীনের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো, যাবতীয় কার্যক্রম সিকিউরিটিজ আইন ও দেশের প্রযোজ্য অন্যান্য আইনসহ ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩ এবং ডিএসইর ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে। এই চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চুক্তি স্বাক্ষরের পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া কমিশনের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া শর্তাবলির আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় পরিবর্তন করা যাবে না।
এর আগে গত সোমবার চীনের দুই পুঁজিবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডাররা।
সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম ডিএসইর পার্টনার হতে ২২ টাকা দরে ২৫ শতাংশ শেয়ার নিতে আবেদন করে। পাশাপাশি কনসোর্টিয়ামটি ৩৭ মিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু বিএসইসি নানা শর্তে আটকে দেয় চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব।
চীনা কনসোর্টিয়ামকে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগই ছাড় চেয়েছিল চীনা কনসোর্টিয়াম। পরে নতুন করে আরও কিছু শর্ত দেয় কমিশন। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য চীনের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে এবং ডিএসই ও বিএসইসির সঙ্গে বৈঠক করে। কমিশনের শর্তগুলো পর্যালোচনার পর চীনা প্রতিষ্ঠানটি নমনীয়তা দেখায়। একই সঙ্গে ডিএসইকে জানায় ইতিবাচক অবস্থানের কথা।
এদিকে চীনের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রস্তাব করার পাশাপাশি ডিএসইর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বের প্রস্তাব দেয় এবং শেয়ার বিক্রি করে চলে যাওয়ার কোনো শর্ত দেয়নি। বাজারে নতুন পণ্য আনার প্রস্তাব দেয় প্রতিষ্ঠানটি। শেনজেন ও সাংহাই নির্দিষ্ট কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে শেয়ার কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। কারিগরি সহায়তাও দেবে চীন।
২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদা করার জন্য ‘ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট ২০১৩’ করা হয়। কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ছাড়াও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিক বিবেচনায় কৌশলগত অংশীদার নেওয়ার এবং তাদের জন্য মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়। সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বা ব্রোকারেজ মালিকরা স্টক এক্সচেঞ্জটির ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় থাকবে বলে জানানো হয়। বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার পরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, চীনের কনসোর্টিয়ামকে বিএসইসির অনুমোদনের মাধ্যমে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। এটা সবার জন্য সুখবর। এর মাধ্যামে আমাদের পুঁজিবাজারের এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। চীন নিশ্চয়ই আমাদের পুঁজিবাজারের জন্য কাজ করবে।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদনের জন্য ডিএসইর সেক্রেটারি মো. আসাদুর রহমান বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয়। ১৯ মার্চ ডিএসইর দেওয়া চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী করার প্রস্তাব অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে ডিএসই কর্তৃপক্ষকে নতুন করে সংশোধিত প্রস্তাব করার সুযোগ দেয়। এরই আলোকে ৩০ এপ্রিল ইজিএম আয়োজন করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০