নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। উত্তীর্ণদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে ফল প্রকাশ করেন। আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশের আগে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসএসসির ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।
তথ্যমতে, গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল এক লাখ চার হাজার ৭৬১ জন। সেই হিসাবে এবার পাসের হার দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। তবে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৮৬৮ জন বেড়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘২০০৯ সালে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার বছর এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে তা ২০১৪ সালে ৯২ দশমিক ৬৭ শতাংশ হয়। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে পাসের হার কমছে। গত নয় বছরের মধ্যে এবারই পাসের হার সবচেয়ে কম। তবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা, বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী বাড়া ও মেয়েদের ভালো ফল করার মতো বিষয়গুলো ইতিবাচক। বছরের প্রথম দিন সব স্কুলে নতুন বই পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে।’
এদিকে গত তিন বছরে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারের ক্ষেত্রে দেশসেরা হওয়ার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ড থেকে এবার মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৮৬ দশমিক সাত শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র ৮৫ দশমিক ১৫ ও ছাত্রী ৮৭ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। যদিও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এ বোর্ড। এবার এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছেলেরা এগিয়ে আছে।
কুমিল্লা বোর্ডে এ বছর পাসের হার ৮০ দশমিক ৪০ শতাংশ, এর মধ্যে ছাত্র ৮১ দশমিক ২৯ ও ছাত্রী ৭৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দিনাজপুর বোর্ডে এ বছর পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। তাদের মধ্যে ছাত্র ৭৫ দশমিক ৮১ ও ছাত্রী ৭৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সিলেট বোর্ডে এ বছর পাসের হার ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র ৭১ দশমিক ৩৩ ও ছাত্রী ৬৯ দশমিক ৭১ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র পাস করেছে ৭৫ দশমিক ৮৬ ও ৭৫ দশমিক ১৯ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। এ বছর বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ১১ শতাংশ। এদের মধ্যে ছাত্র পাস করেছে ৭৫ দশমিক ২৩ ও ছাত্রী পাস করেছে ৭৯ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।
এদিকে এ বছর কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৯৬ শতাংশ; এর মধ্যে ছাত্র পাস করেছে ৭০ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ছাত্রী পাস করেছে ৭৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫-এর সংখ্যা চার হাজার ৪১৩।
এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এ বছর পাস করেছে ছাত্র ৭১ দশমিক ১২ ও ছাত্রী ৭০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ বছর বোর্ডটিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ৩৭১ জন শিক্ষার্থী; গত বছর পেয়েছিল দুই হাজার ৬১০ জন।
এছাড়া এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৬৯২টি কমেছে। এবার এক হাজার ৫৭৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে সবাই ফেল করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীই ফেল করেছিল। এবার মোট ১০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি।
এসএসসিতে পাসের হার কমে ৭৮ শতাংশ
