শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভেনেজুয়েলার অর্থনৈতিক মন্দা তীব্র হওয়ায় রফতানি হ্রাসের সম্ভাবনা এবং ইরানের ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধজ্ঞা আসতে পারে এমন শঙ্কায় প্রভাব পড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স।
আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্কে লন্ডনের ব্রেন্ট তেলের দাম সোমবার বেড়ে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয় ৭৫ ডলার ৫৭ সেন্টে। আগের দিনের তুলনায় এ দাম ৭০ সেন্ট বা দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। লেনদেনের শুরুতে পণ্যটির দাম ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিল।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিটে (ডব্লিউটিআই) ভবিষ্যৎ সরবারের চুক্তিতে এদিন প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম পৌঁছায় ৭০ ডলার ৪২ সেন্টে। আগের কর্মদিবসের তুলনায় ৭০ সেন্ট বা ১ শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর এ বাজারে প্রথমবারের মতো ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম ৭০ ডলার ছাড়াল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যতম প্রধান তেল রফতানিকারক দেশ ভেনেজুয়েলায় অর্থনৈতিক মন্দা তীব্র হচ্ছে। এটি দেশটির তেল উৎপাদন ও রফতানির জন্য বড় হুমকি। ২০০০ সালের শুরু থেকে থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে তেল উত্তোলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন দেশটিতে ১৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি পেট্রোলিয়াম শিল্পে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে পারছে না।
এদিকে ইরানের সঙ্গে ছয় পশ্চিমা রাষ্ট্রের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে পরিবর্তন চায় যুক্তরাষ্ট্র। সংশোধন না হলে তা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১২ মে বৈঠকে চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনের বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে পণ্যটির বাজারে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা, এ শঙ্কা থেকে পণ্যটির দাম বেড়ে চলেছে।
তেলের দরপতন ঠেকাতে দীর্ঘদিন ধরেই ওপেকের নেতৃত্বে প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো চেষ্টা করে আসছিল উত্তোলন হ্রাস করে সরবরাহ কমাতে। এর ধারাবাহিকতায় দেশগুলো উত্তোলন হ্রাস মেয়াদ আরও বাড়াতে পারে এমন সম্ভাবনায় জ্বালানি তেলের দর বাড়তে সহযোগিতা করেছে।
২০১৪ সালের শেষ সময় থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতন শুরু হয়। ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো পণ্যটির সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী দেশগুলো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত দৈনিক উৎপাদন ১৮ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুদ পাঁচ বছরের গড়ের সমপর্যায়ে আসবে বলেও আশা করা হয়।