শ্রমবাজারে অংশগ্রহণে অনেক পিছিয়ে নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট পুরুষ শ্রমশক্তির প্রায় ৮০ শতাংশ কর্মে নিয়োজিত। নারীর ক্ষেত্রে এ হার মাত্র ৩৬ শতাংশ। সরকারের ঘোষিত বিভিন্ন উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন ও জনমিতির লভ্যাংশ ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে উদ্বৃত্ত নারী জনশক্তিকে অবশ্যই যথাযথ উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।
রাজধানীর গুলশানে গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন বক্তারা। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনে নারীর আনুষ্ঠানিক শ্রম বাজারে আনতে এখন থেকে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ‘জনমিতিক লভ্যতার সদ্ব্যবহারে নারীদের জন্য যথাযথ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা’ শীর্ষক এই সমীক্ষা প্রতিবেদনে মোস্তাফিজুর রহমান উল্লেখ করেন, ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সদ্ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই দেশের নারী শ্রমশক্তি কাজে লাগাতে হবে। বর্তমানে মহিলাদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মাত্র শ্রমবাজারে আছে। দেশের ৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী শিক্ষা, চাকরি বা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণে নেই। এরকম একটা অবস্থান থেকে আমাদের উত্তরণ করতে হলে শিক্ষাই বড় ভূমিকা রাখবে।’
বাংলাদেশের নারীদের সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ তৈরি পোশাকশিল্পে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সঙ্গে যদি নারীদের কর্মমূলক প্রশিক্ষণও দেওয়া যায়, তবে তা নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ানোয় ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) শামসুল আলম বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান কীভাবে কমিয়ে আনুষ্ঠানিক আনা যায়, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে। আবার গৃহস্থালির কাজ করেন, কিন্তু মজুরি পানÑএমন নারীদের কাজের মূল্য কীভাবে বের করা যায়, তা গবেষণা করে বের করা উচিত। তাহলে তাদের অবদান জাতীয় আয়ে যুক্ত করা যাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চার বছরের ব্যবধানে দেশের কর্মজীবী মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। ২০১৩ সালে একজন কর্মজীবী প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার ১৫২ টাকা মজুরি পেতেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এসে তা কমে ১৩ হাজার ২৫৮ টাকা হয়েছে। প্রকৃত আয় কমেছে আড়াই শতাংশের মতো।
অন্যদিকে পুরুষদের চেয়ে নারী কর্মজীবীদের প্রকৃত আয় বেশি কমেছে। ২০১৩ সালে একজন কর্মজীবী নারী প্রতি মাসে গড়ে ১৩ হাজার ৭১২ টাকা মজুরি পেতেন। এখন পান ১২ হাজার ২৫৪ টাকা। মজুরি কমেছে তিন দশমিক আট শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষরা চার বছর আগে পেতেন ১৪ হাজার ৩০৯ টাকা। এখন এক দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৫৮৩ টাকা মজুরি পান।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০