জমাট বাঁধা সার নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

মাঘ-ফাল্গুনে বোরোর চারা লাগানোর উত্তম সময় বলে ধরে নেন কৃষক। এ সময় মাঠে তারা ব্যস্ত সময় পার করেন সাধারণত। এ ফসলের ওপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা। এ অবস্থায় গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘বাঘাবাড়ী নৌবন্দর ও বাফার গুদাম: সাড়ে ৫ হাজার টন ইউরিয়া জমাট’ শিরোনামে খবরটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে। এতে বলা হয়, এ জমাট বাঁধা সার নিতে ডিলাররা অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) হ্যামার দিয়ে গুঁড়া করে রিপ্যাকিং অবস্থায় তা সরবরাহ করছে। তবে এ সার দিয়ে ভালো ফলন হবে কি না, এ নিয়ে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার কৃষকের মধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

চীন থেকে আমদানি করা সার বাঘাবাড়ী বন্দরে আনার পর গুদামে জায়গা না থাকায় বিসিআইসি তা বুঝে নেয়নি। ফলে খোলা জায়গায় তা রাখা হয়। প্রশ্ন রয়েছে, গুদামে সার রাখার জায়গা না থাকলে কেন সেগুলো নিয়ে আসা হলো? আর নিয়ে আসার পর সেগুলো খোলা জায়গায় না রেখে বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত কি না, সেটাও ভাবতে পারেন সংশ্লিষ্টরা। জমাট বাঁধা সার ডিলারদের নিতে বলেছে বিসিআইসি। এ সারের নমুনা ঢাকার পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে মান ঠিক রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। তাই রিপ্যাকিং করে কৃষকের মাঝে সরবরাহ করতে এবং এ ব্যাপারে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিসিআইসি। কিন্তু কৃষকদের শঙ্কা কাটছে না বলে জানা গেছে।

সরকার নিজেদের কৃষকবান্ধব বলে দাবি করে থাকে। কৃষির উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সারের ঘাটতি-সংক্রান্ত খবর আর দেখা যায় না। সরকার কৃষকের দোরগোড়ায় সার পৌঁছে দিচ্ছে। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। কিছু খাদ্যশস্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে ইতোমধ্যে। যদিও একসময় সারের দাবিতে বিক্ষোভরত কৃষককে গুলি খেয়ে মরতে হয়েছে।

মানসম্পন্ন সার সরবরাহের বিকল্প নেই। এ বিপুল পরিমাণ জমাট বাঁধা সার গুঁড়া করে রিপ্যাকিং করতে বড় অঙ্কের একটা খরচ হবে নিশ্চয়। এটা এক ধরনের অপচয়মূলক ব্যয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণেই এ অপচয়। একই সঙ্গে কৃষককে শঙ্কায় ফেলাও দুর্ভাগ্যজনক। এমন পরিস্থিতি ভবিষ্যতে যাতে সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টরা সচেষ্ট থাকবেন বলেই প্রত্যাশা।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০