রোহিঙ্গা নির্যাতন গণহত্যা: তাওয়াক্কল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ইয়েমেনের মানবাধিকার কর্মী তাওয়াক্কল কারমান। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, দুঃখজনক হলেও সত্য তা করা হয়নি।
গতকাল চট্টগ্রামের একটি হোটেলে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) আয়োজিত ‘টিকে থাকার জন্য টেকসই উন্নয়ন: একটি ন্যায়সংগত পৃথিবী গড়তে চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমদ সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপাচার্য নির্মলা রাও, জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমীলা প্যাটেন ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইসমাইল সেরাগেলিদন উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শান্তিতে নোবেল জয়ী তাওয়াক্কল বলেন, দুই মাসে আগে নোবেলজয়ী শিরিন এবদিসহ আমি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছি। ওই সময় প্রায় ১০০ নারীর কথা শুনেছি। তাদের প্রায় সবাই বলেছে, তাদের চোখের সামনেই তাদের মা-বাবা, ভাইবোন ও সন্তানদের জবাই করে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের ওপর যা হয়েছে তা গণহত্যা।
গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে এ মানবাধিকারকর্মী বলেন, উন্নয়ন ছাড়া শান্তি আসে না। শান্তি ছাড়া উন্নয়ন হয় না। তিনি বলেন, প্রতিটি স্বৈরশাসকই একজন সন্ত্রাসী। আবার প্রত্যেক সন্ত্রাসীই একজন স্বৈরশাসক। তারা একে অপরকে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নীরবতার কারণে বিশ্ব অবনতিশীল পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
সংঘাতে যৌন সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমীলা প্যাটেন বলেন, যৌন নির্যাতন এক ধরনের যুদ্ধ। জাতিগত সহিংসতার সময় সংঘটিত যৌন নির্যাতনকে মানতবার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। তিনি বলেন, সমাজের নীরবতার কারণে যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েই চলছে। যে কোনো ধরনের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সবাইকে এক সঙ্গে সোচ্চার হতে হবে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৮১ হাজার নারী এখনও অন্তঃসত্ত্বা উল্লেখ করে প্রমীলা প্যাটেন বলেন, এসব নারীর পরিবার পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো সচেতনতা নেই। তিনি বলেন, ‘নির্যাতিত নারীরা আমাকে জানিয়েছেন তারা সে দেশের সেনা সদস্যদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
সিম্পেজিয়ামের অন্যমত আলোচক বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইসমাইল সেরাগেলিদন বলেন, ধনী দেশগুলো শরণার্থীদের জন্য তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা ঠিক নয়। শরণার্থী সমস্যা নিরসনে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করেত হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০