শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সরকার গড়া নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে ভারতের পুঁজিবাজারে। টানা চার দিন কমেছে সেনসেক্স সূচক। সর্বশেষ গত শুক্রবার পড়েছে আরও ৩০০ দশমিক ৮২ পয়েন্ট। এ নিয়ে দু’দিনে সূচক কমেছে ৫৩৯ পয়েন্টেরও বেশি। গত সপ্তাহে মোট ৬৮৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমেছে।
কর্ণাটক রাজ্যে ফল ঘোষণার দিনও শুরুতে প্রায় ৪৩৬ পয়েন্ট উঠেছিল সূচক, কিন্তু পরে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার সংকট সামনে আসতেই এক ধাক্কায় ১২ দশমিক ৭৭ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। রাজনৈতিক উত্তাপে ইন্ধন জুগিয়েছে বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বমুখী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ডলারের বিপরীতে রুপির মান বৃদ্ধি। গত অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর হতাশাজনক ফল। তার ওপর এ দিনই আবার বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা উসকে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের চীনের একতরফা সুবিধা পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তাদের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত আলোচনা সফল হওয়ার ব্যাপারেও।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এসব কারণে আগামী দিনে আরও বড় সংশোধন দেখতে পারে বাজার। টানা দু’দিন ওঠার পরে এদিন ডলারে ৩০ পয়সা পড়েছে রুপির দামও। এক ডলার হয়েছে ৬৮ রুপি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সরকার গড়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়াতেই মূলত বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাজারে। এর কারণ বিশেষ কোনো দলের প্রতি টান নয়। বরং একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাত ধরে সরকারে স্থায়িত্ব প্রত্যাশা করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের নজর আগামী লোকসভা ভোটের দিকেও। কারণ তারা মনে করেন, সরকার স্থায়ী হলেই সংস্কারে গতি আসে।
স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ অবশ্য বলছেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল যেভাবে বাড়ছে, তা শেয়ারবাজারের পক্ষে চিন্তার বিষয়। পাশাপাশি গত অর্থবছরে বিশেষত ব্যাংকগুলোর মুনাফায় ভাটা। এ সবের প্রভাব পড়ছে বাজারে।’
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর নতুন মোড় নিয়েছে রাজনীতি। সরকার গড়া নিয়ে চলছে লড়াই। এর পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল শনিবার বিকাল ৪টার মধ্যেই বিধানসভায় আস্থাভোটে শক্তির এ পরীক্ষা দিতে বলা হয় তাকে। কর্ণাটকে শক্তি পরীক্ষায় রাজ্যপাল বাজুভাই বালার দেওয়া ১৫ দিন সময়সীমা খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট নতুন এ সময় বেঁধে দেন। এর পর সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
