দাম নিয়ন্ত্রণে তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহের আশ্বাস সৌদি আরবের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে। দাম আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দাম নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে সৌদি আরব। গত শুক্রবার দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ বলেছেন, তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও ওপেকবহির্ভূত প্রধান উৎপাদক দেশগুলোর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। পর্যাপ্ত সরবরাহের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতিতে তারা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি। খবর রয়টার্স।
ওপেক দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী এ জ্বালানিমন্ত্রী এক টুইটে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সমপর্যায়ের মন্ত্রীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। বিশ্ববাজারে তেলের দাম নিয়ে উদ্বেগ কমাতে তারা একত্রে কাজ করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এছাড়া আরেক টুইটে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। তিনিও বিশ্ববাজারে ও বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বাকি দেশগুলোর সঙ্গেও সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী কয়েক দিনের মধ্যেই আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের জ্বালানিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে ফালিহর। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে পেট্রল ও ডিজেলের দাম টানা বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে দেশটি। সৌদি মন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরবের মূল লক্ষ্যই হলো বিশ্ব প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা। এজন্য যা করতে হয়, সবই তারা করবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর এটিই জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ দাম। শুক্রবার যদিও তেলের দাম কমে ৭৯ ডলার ৭০ সেন্টে পৌঁছেছে।
২০১৪ সালের শেষ সময় থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতন শুরু হয়। ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো পণ্যটির সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী স্বাক্ষরকারী দেশগুলো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত দৈনিক উৎপাদন ১৮ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুত পাঁচ বছরের গড়ের সমপর্যায়ে আসবে বলেও আশা করা হয়। রাশিয়াসহ ওপেকবহির্ভূত ১০টি দেশ এ চুক্তি মেনে পণ্যটির উত্তোলন কমাতে রাজি হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে এর মেয়াদ আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় গত ৩০ নভেম্বর ওপেক সভায় আবারও ৯ মাসের জন্য আর্থাৎ ২০১৮ সালের শেষ সময় পর্যন্ত উত্তোলন হ্রাস চুক্তি মেয়াদ বাড়ানো হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরবরাহ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পণ্যটির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। অব্যাহতভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এশিয়ার অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।
কানাডার বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেট চলতি মাসেই এক বিবৃতিতে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, তেলের দাম বৃদ্ধিতে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর তেলের দাম সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার পর এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
বিশ্বব্যাপী বর্তমানে দিনে প্রায় ১০ কোটি ব্যারেল জ্বালানি তেল ব্যবহƒত হয়। এর ৩৫ শতাংশই ব্যবহƒত হয় এশিয়া অঞ্চলে। বিভিন্ন সংস্থার তথ্যানুযায়ী এ চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে কম তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল এশিয়া। এ অঞ্চলে মাত্র ১০ শতাংশ তেল উৎপাদিত হয়।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১