নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কৃষি খাতে মোট কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। আর প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করেছে ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা, যা পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৫৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষিঋণ-সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কৃষি খাতে মোট ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি দেশি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে নির্ধারিত আট হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আটটি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে চার হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। যাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে ঋণ বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার ৪৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
এদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ব্যাংক আল-ফালাহ্, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান কৃষি ও পল্লিঋণ খাতে কোনো অর্থ বিতরণ করেনি। একই সঙ্গে ৫০ শতাংশের নিচে রয়েছে ২২টি ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক, তিনটি বিদেশি ও ১৬টি দেশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অগ্রাধিকার খাত হিসেবে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণ বাড়াতে সব সময় ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আর ব্যাংকগুলোর দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ না হলে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা গুনতে হবে। এসব কারণেই কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। তবে এখনও কিছু ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে, তাদের অবশ্যই তা পূরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় কৃষি খাতে মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক, দুটি বিশেষায়িত ও ৩৮টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ব্যাংকগুলো বিতরণ করে ১৭ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বেশি কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে। বিতরণ করা এ ঋণ লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় আট এবং পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি ঋণ বিতরণ হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ও ডিবিবিএল বেশি পিছিয়ে। এছাড়া নতুন ব্যাংকগুলোও কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে পড়েছে।
চলতি অর্থবছরে ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। প্রথম ছয় মাসে এ ব্যাংক কৃষি খাতে ২৪ কোটি টাকা বিতরণ করেছে, যা ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রার ২৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ সময় মেঘনা ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ১২ দশমিক ৬৭, মধুমতি ব্যাংক ৯ দশমিক ২০, ইউনিয়ন ব্যাংক দশমিক ৮৩, এনআরবি গ্লোবাল ১৯ দশমিক ৭৪ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক ২৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে।
Add Comment