নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে ক্রমাগত পতনের ধাক্কায় লেনদেন ব্যাপকহারে কমে যাচ্ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মোট লেনদেন কমেছে তিন দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর দৈনিক গড় লেনদেনও একই হারে কমেছে। গত সপ্তাহে এবং আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় পাঁচ কার্যদিবস করে। এর মধ্যে সূচকের পতন হয় চার দিন। মাত্র এক দিন সূচক ইতিবাচক ছিল। উত্থানের চেয়ে পতনের হার বেশি ছিল। সবকটি সূচক পতনের পাশাপাশি লেনদেন ও বাজার মূলধন কমে গেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে একই চিত্র লক্ষ করা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৫ দশমিক ৮১ শতাংশ বা এক দশমিক ৫৮ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৩৪৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক এক দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ কমে এক হাজার ২৩৮ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক ৩৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে এক হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৪৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ২১৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৬ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি একটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪৫৩ কোটি তিন লাখ ৩৬ হাজার ২১০ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৭১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫২ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৯৩ শতাংশ।
অন্যদিকে সিএসইতে ২৮২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ১৭৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৪টির দর।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ২৬৫ কোটি ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৯ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল দুই হাজার ৩৫৭ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৬১ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৯৩ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৮৫ হাজার ৫০১ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে এক দশমিক ৪৪ শতাংশ বা পাঁচ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে এক দশমিক ৪১ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক কমেছে এক দশমিক ৪২ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমে এক দশমিক ৭১ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক কমে এক দশমিক ৬৩ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে এক দশমিক ৩২ শতাংশ।
সিএসইতে গত সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৬ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১০৮ কোটি ৭৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৬৮ টাকা। লেনদেন কমেছে দুই কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল মুন্নু জুট স্টাফলার, সাফকো স্পিনিং, শাশা ডেনিমস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, মুন্নু সিরামিক ও ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস।
অন্যদিকে ১৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমে রূপালী ব্যাংকের। এর পরের অবস্থানে ছিল এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এনসিসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, বিএসআরএম, তাকাফুল ইসলামি ইন্স্যুরেন্স ও অ্যাডভেন্ট ফার্মা।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি ইন্ট্রাকো রি ফুয়েলিং, বেক্সিমকো লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএসআরএম, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, কুইন সাউথ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ ও মুন্নু সিরামিক।
১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দর বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল শাশা ডেনিমস, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, সাফকো স্পিনিং, বিচ হ্যাচারি, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, খুলনা পাওয়ার, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ও ইমাম বাটন।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে রূপালী ব্যাংক, ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স, এনসিসি ব্যাংক, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসিং, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন কেব্লস, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও পিপলস লিজিং।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এর পরে স্কয়ার ফার্মা, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, গ্রামীণফোন, ইস্টার্ন ব্যাংক, বিএসআরএম, শাশা ডেনিমস, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও নাহি অ্যালুমিনিয়াম।
