জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কর্মসূচির আওতায় আটা বিক্রির শুরু থেকে প্রতিনিয়ত চলছে অনিয়ম। একাধিক বার পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ এবং কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও নেওয়া হচ্ছে না প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। ফলে থামছে না অনিয়ম।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালমনিরহাট শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওএমএস পয়েন্টে গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টায় ১২ বস্তা আটা পাওয়া যায়। তবে কতগুলো আটা বিক্রি হয়েছে এবং ওএমএস পয়েন্টের কোনো তথ্য দিতে রাজি নন ওএমএস ডিলার জোসনা পারভিনের স্বামী। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে তার নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়ে পান ছয় বস্তা আটা। অথচ আধঘণ্টা আগের ভিডিও ফুটেজে ১২ বস্তা আটা ছিল এমন প্রমাণ দেখালে জোসনা পারভিন ও তার স্বামী কোনো সঠিক উত্তর দেননি।
এমনকি নয়ারহাট পয়েন্টে মাস্টার রোল অনুযায়ী ১৪২ কেজি আটা অবশিষ্ট থাকার কথা থাকলেও সেখানে ১২৮ কেজি আটা পাওয়া যায়। এছাড়া পুরান বাজার (কালীবাড়ী), মুক্তিযোদ্ধা চত্বর (থানাপাড়া মসজিদ সংলগ্ন), পৌরসভা চত্বর ও কলেজ বাজার এলাকার ওএমএস পয়েন্টে গেলে প্রতিটি পয়েন্টে আটার অবিক্রীত বস্তা পাওয়া যায়। আর ওএমএস ডিলাররা প্রতিদিন খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় ৮৩৩ কেজি আটা বিক্রি দেখিয়ে আসছেন। কিন্তু এ অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার পরেও ডিলারদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
ওএমএস ডিলাররা জানান, প্রতিদিন শতভাগ (৮৩৩ কেজি) আটা বিক্রি হচ্ছে। বিক্রির মাস্টার রোল খাতা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। অথচ ওএমএস পয়েন্টের বিক্রয় কর্মীরা জানান, আটা বিক্রির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কোনো দিন শতভাগ আটা বিক্রি হয়নি। পাঁচ থেকে ছয় বস্তা (২৫০ থেকে ৩০০ কেজি) পর্যন্ত প্রতিদিন বিক্রি হয়। আর খুব বেশি বিক্রি হলেও দু’একদিন ১০ বস্তা (৫০০ কেজি) বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, ওএমএসের অনিয়মের বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবেন না তিনি। এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে ওএমএস কমিটির সদস্যরা নেবেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, নতুন তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে কোনো অনিয়ম হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওএমএস ডিলার পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করে দেখেছেন, কোনো পয়েন্টে ৮৩৩ কেজি করে আটা বিক্রি হয়নি। এছাড়া
বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, বিষয়টি তিনি দেখছেন।
লালমনিরহাটে থামছেই না ওএমএসের অনিয়ম
