নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট আজ। নতুন সিটি মেয়র ও কাউন্সিলর বেছে নিতে ভোট দেবেন গাজীপুরের বাসিন্দারা। প্রায় ১১ লাখ ৩৮ হাজার ভোটারের ভোট গ্রহণের জন্য ৪২৫টি কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এ নির্বাচনে সাত মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি কাউন্সিলর পদে ২৫৬ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে অন্যায়-অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল। অন্যদিকে নির্বাচন ঘিরে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীর নির্বাচনী নেতাকর্মী, সমর্থক ও এজেন্টদের যেন গ্রেফতার করা না হয়Ñতা নিশ্চিত করতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গাজীপুরে ৪২৫ কেন্দ্রের মধ্যে ছয় কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেবে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া তিন কেন্দ্রে বসানো সিসি ক্যামেরা থেকে সরাসরি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নজর রাখতে পারবে নির্বাচন কমিশন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রার্থী, সমর্থক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীÑযেদিক থেকেই অনিয়ম হোক না কেন, কঠোরভাবে তা দমন করা হবে। যদি কেউ নির্বাচনে অন্যায়-অনিয়ম করেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কড়া মেসেজ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী কাজে যদি বিঘœ সৃষ্টি করা হয়, তিনি প্রার্থী বা সমর্থক বা কোনো অফিসিয়াল হতে পারেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কড়া আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সভাতেও ‘কড়া বার্তা’ দেওয়া হয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, প্রশাসন বা কোনো কর্তৃপক্ষ যদি নির্বাচনে বাধার সৃষ্টি করে, প্রত্যক্ষভাবে হোক বা পরোক্ষভাবে হোক, আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সব অথরিটি আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা সার্বিকভাবে সহায়তা করবে। কোনোরকম অন্যায়-অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।’
পুলিশ বিএনপি কর্মীদের ‘নির্বিচারে গ্রেফতার ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে’ কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের অভিযোগের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘তারা অভিযোগ করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে আমলে নিচ্ছি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবহিত করছি। তদুপরি কমিশনে আমরা চিঠি দিচ্ছি। কমিশন থেকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। রোববার পুলিশ সুপারকে লেখা একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। যাতে বলা আছেÑফেরারি ছাড়া কাউকে বিনা কারণে হয়রানি করা যাবে না। নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। বিষয়টি আমরা প্রার্থী হাসান সরকারকেও জানিয়েছি; অন্য প্রার্থীদেরও জানিয়েছি। পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছি, যাতে সবাই সচেতন থাকেন। সব মিলিয়ে গাজীপুরবাসীকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।’
এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীর নির্বাচনী নেতাকর্মী, সমর্থক ও এজেন্টদের যেন গ্রেফতার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মাদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই নির্দেশনা দেন।
সে সঙ্গে পুলিশ বা অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী, তার সমর্থক ও প্রচারকারীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের গাইডলাইন মেনে চলতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে নাÑতা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। পরবর্তী দু’সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারসহ চারজনকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।